You are currently viewing ফাইভার ডট কম এ কিভাবে সহজে অ্যাকাউন্ট খুলবেন এবং অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যাওয়ার কিছু কারন

ফাইভার ডট কম এ কিভাবে সহজে অ্যাকাউন্ট খুলবেন এবং অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যাওয়ার কিছু কারন

ফাইভার ডট কম এ কিভাবে সহজে অ্যাকাউন্ট খুলবেন এবং অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যাওয়ার কিছু কারন

যারা অনলাইনে কাজ করে বা ফ্রিল্যান্সিং করে তারা বিভিন্ন দক্ষতা এবং পরিষেবা প্রদান করে অর্থ উপার্জন করার জন্য ফাইভারে অ্যাকাউন্ট করে থাকেন। ফাইভার ডট কম তাদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেয় যেখানে তারা অর্থের বিনিময়ে তাদের দক্ষতা এবং পরিষেবাদি বিপণন করতে পারে। তারা ফাইভারে ফি প্রদান করে তাদের পরিষেবাগুলি সরবরাহ করে। আপনি আপনার দক্ষতার ক্ষেত্রের উপর নির্ভর করে একাধিক পরিষেবা সরবরাহ করতে পারেন।

ফাইভার ফ্রিল্যান্সারদের জন্য যারা অনলাইনে কাজ করে বা পরিষেবা সরবরাহ করে তারা কীভাবে সহজে নিজেরাই ফাইভার অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারে সে সম্পর্কে তাদের জন্য একটি বিস্তারিত গাইড।

এই গাইডের সাহায্যে, আপনি কারও সাহায্য ছাড়াই নিজেই নিজের ফাইবার অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। ফাইভার সম্পর্কে কিছু কথা জেনে আসি।

ফাইভার ডট কমঃ ফাইভার হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং পরিষেবা সরবরাহকারী অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এখানে ফ্রিল্যান্সার ও Buyer এর মধ্যে অনলাইন পরিষেবা বিনিময় হয়ে থাকে। অনলাইন পরিষেবাগুলোর মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি, ভিডিও এডিটিং, কন্টেন্ট রাইটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

ফাইভারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে ফ্রিল্যান্সারদের সাথে চুক্তি করে কাজ করিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়াটি সহজ করা। এর বিনিময়ে ফাইভার ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ কমিশন নেয়। এখানে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে। কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের একটি কাজ বছরে একবার করার প্রয়োজন হয় এজন্য যদি তিনি একজন কর্মচারী নিয়োগ দেন তার খরচ অনেক বেড়ে যাবে। তাই তিনি ওই একদিনের কাজের জন্য লোক খোঁজেন। আর ফাইভার তার জন্য ফ্রিল্যান্সার খোঁজার কাজটি অনেক সহজ করে দেয়।

ফাইভারে কাজ করার জন্য ও কাজ করানোর জন্য একাউন্ট খুলতে হয়। ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করার জন্য এবং ক্রেতারা কাজ দেওয়ার জন্য একাউন্ট খোলেন। যদি আপনি একজন ক্রেতা হয়ে থাকেন তাহলে আপনি Buyer অ্যাকাউন্ট খুলবেন আর যদি ফ্রিল্যান্সার হন তাহলে seller অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন। তবে আপনি আপনার প্রয়োজন মতো অ্যাকাউন্ট সুইচ করতে পারবেন।

যেমন ধরুন, আপনি একজন ফ্রিল্যন্সার কিন্তু আপনি একটি কাজ পেলেন কিন্তু সময়ের অভাবে কাজটি করতে পারছেন না তখন আপনি বিক্রেতা থেকে ক্রেতা হয়ে কাজটি অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নিতে পারবেন। এই বিষয়গুলো আরো বিস্তারিত আলোচনা করব। তার আগে জেনে নেই আমরা কিভাবে ফাইভারে একাউন্ট খুলব।

ফাইভারে কিভাবে একাউন্ট খুলতে হয়?

  • প্রথম একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজন একটি ভেরিফাইড ইমেইল একাউন্ট, আপনার ছবি, একটি User name। ইউজার নেইমটি হতে হবে ইউনিক যা এর আগে কেউ ব্যবহার করেনি। আপনার ইউজার নেইমটি ইউনিক না হলে “User name” unavailable দেখায়।
  • ফাইভারের হোমপেজে গিয়ে জয়েনে ক্লিক করুন । ইমেইল অ্যাডড্রেস লিখে কন্টিনিউ ক্লিক করুন ।
  • একটি ইউজার নেইম পছন্দ করুন এবং যোগ করুন। তবে ইউজার অবশ্যই ইউনিক হতে হবে।
  • পাসওয়ার্ড লিখুন এবং জয়েন ক্লিক করুন।

এখন আপনি ফাইভারে নিবন্ধিত ব্যবহারকারী হয়ে গেছেন। তারপর আপনার একাউন্টটি সক্রিয় করার জন্য একটি ইমেইল পাঠানো হবে। আপনি আপনার ইমেইল থেকে একাউন্টটি এক্টিভেট করে দিলেই আপনার ফাইভার অ্যাকাউন্ট একটিভ হয়ে যাবে। ফাইভারে একাউন্ট খোলা কঠিন কোনো কাজ নয়। খুব সহজেই ফাইভারে একাউন্ট খোলা যায়।

ফাইভারে seller হতে হলে কি করতে হবে?

উপরের নির্দেশাবলী অনুসরণ করে একাউন্ট খোলার পরে আপনার প্রোফাইলটি সুন্দর করে সাজানো খুবই জরুরী। কারণ আপনার প্রোফাইল যত প্রফেশনাল হবে ক্লাইন্ট বুঝতে পারবে যে আপনি খুব কত ভালো কাজ পারেন।

পদক্ষেপ-১

  • প্রোফাইল ফটোতে ক্লিক করুন ও একটি ভালো ছবি দিন ।
  • ছবির নিচে আপনাকে একটি ট্যাগ লাইন দিন। আপনি যে বিষয় নিয়ে কাজ করতে চান সেটা লিখুন। যদি আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করতে চান তাহলে আপনার ট্যাগলাইন হতে পারে প্রোফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটার । নিম্নে যে ছবিটি অনুসরণ করে আপনি আপনার প্রোফাইল সাজাতে পারেন।

আপনার প্রোফাইলটি সাজানো হয়ে গেলে ফাইভারে কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে গিগ তৈরী করতে হবে। ফাইভারে কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই গিগ খুলতে হবে। গিগ না খুললে আপনি কাজ করতে পারবেন না। চলুন তার আগে জেনে নেওয়া যাক গিগ কি এবং গিগের মাধ্যমে কি করা হয়।

গিগঃ গিগ হচ্ছে আপনার পরিষেবা যেগুলো আপনি বিক্রি করবেন। গিগের মাধ্যমে আপনি ক্রেতার কাছে আপনার কাজের বিবরণ সরবরাহ করবেন যা দেখে তিনি আপনার কাজ সম্পর্কে জানতে পারবেন। এবং যদি আপনার গিগ তার ভালো লাগলে আপনাকে কাজ দিতে আগ্রহী হবেন। গিগের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা কাজ পেয়ে থাকেন। প্রত্যেকটা কাজের জন্য আলাদা আলাদা গিগের প্রয়োজন হয়। যেমন- ফেসবুক মার্কেটিং এর জন্য একটি গিগ তৈরি করতে হবে আবার SEO এর জন্যও আলাদা গিগ খুলতে হবে।

কিভাবে গিগ খুলবেন?

ধাপ-১:

  • গিগ খোলার জন্য create a new gig এ ক্লিক করুন| আপনার কাজ অনুযায়ী গিগের বিবরণ দিতে হবে এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী ভাষা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি দেওয়ার পর continue ক্লিক করুন।

  • ক্যাটাগরি ড্রপ ডাউন মেনুতে আপনার গিগের জন্য উপযুক্ত ক্যাটাগরি ও সাব ক্যাটাগরি নির্বাচন করুন। শিরােনামের ভিত্তিতে আপনার ক্যাটাগরিগুলােকে রিকমেন্ড করবে। একবার গিগ প্রকাশ হয়ে গেলে আপনি ক্যাটাগরি পরিবর্তন করতে পারবেন না তাই ভালো করে দেখে নিবেন শিরোনামের সাথে ক্যাটাগরির মিল আছে কিনা।
  • মেটা ডাটা নির্বাচন করুন।

অনুসন্ধান ট্যাগের ক্ষেত্রে ৩ টি বা ৫ টি ট্যাগ যুক্ত করুন যা আপনার গিগকে সর্বোত্তমভাবে বর্ণনা করে। এই ট্যাগগুলাে আপনি আপনার গিগে কি ধরণের কাজ করবেন সেই সম্পর্কে ধারণা দিবে। এগুলো

  • কীওয়ার্ড হিসেবে কাজ করে।
  • সেভ এবং continue ক্লিক করুন।

ধাপ-২:

  • আপনার প্যাকেজটিতে যে সেবাগুলো দিচ্ছেন তার শিরোনাম ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ লিখুন। যেমন আপনি $5 ডলারে তাকে কতোটুকু সেবা প্রদান করবেন আপনি বেশি কাজের বিনিময়ে বেশি অর্থ প্রত্যাশা করতে পারেন।
  • আপনার প্রদত্ত সেবাগুলোর বিবরণ দিন। যেমন- আপনি যদি ফেসবুক অ্যাড ম্যানেজার গিগ খোলেন তাহলে আপনি কি কি সার্ভিস প্রদান করবেন সেটা সিলেক্ট করে দিতে হবে। যেমন-

  • আপনি কতদিনে কাজ ডেলিভারি করতে পারবেন সেটা উল্লেখ করুন। আপনি কোন প্যাকেজটা কত দিনে ডেলিভারি দিতে পারবেন সেটা গ্রাহককে জানানো খুবই জরুরী।
  • কাজ করার পরে আপনি তাকে কিভাবে তাকে কাজটি ডেলিভারি করবেন বা কোন ধরণের ফাইলের মাধ্যমে পাঠাবেন সেটি সিলেক্ট করুন।
  • যদি Buyer এর কাজ পছন্দ না হয় তাহলে আপনি KZevi তাকে কাজটি আবার ঠিক করে দিবেন বা রিভিশন দিবেন সেটা উল্লেখ করুন।
  • এক্সট্রা ফাস্ট ডেলিভারির জন্য বা এক্সট্রা কোন কাজ করে দেওয়ার জন্য কত টাকা পারিশ্রমিক নিবেন উল্লেখ করুন। তারপর সেভ এবং কন্টিনিউ ক্লিক করুন।

ধাপ-৩:

১. আপনি আপনার গিয়ে এমন কিছু প্রশ্ন যোগ করুন যাতে ক্রেতারা আপনার গিগ তাদের প্রয়োজন পূরণ করবে কিনা সেটা বুঝতে পারে। এই প্রশ্ন গুলোকে বলা হয় FAQ (Frequenty Asked Question)। Buyer আপনাকে কাজ দিলে সে কি ধরণের সুবিধা পাবে এই এবং তার মনে কিছু সাধারণ প্রশ্ন জাগতে পারে যা আপনাকে জিজ্ঞাসা করতে সে দ্বিধা বোধ করে। আর এই বিষয় গুলো তার কাছে পরিষ্কার করার জন্যই FAQ যোগ করা হয়। এতে আপনার প্রতি Buyer সন্তুষ্ট হবেন এবং আপনাকে কাজ দিতে আগ্রহ বোধ করবেন।

২. আরো প্রশ্ন যোগ করতে চাইলে Add FAQ ক্লিক করুন। তারপর সেভ এবং কন্টিনিউ ক্লিক করুন।

৩. আপনার উত্তরগুলো কি হতে পারে সেটা লিখুন। আপনার FAQ এর উত্তর গুলো Free Text বা Multiple Answer বা Attached File হতে পারে। কিন্তু Free Text সিলেক্ট করাই ভালো । সবাই তাদের কথা মন খুলে Free Text এর মাধ্যমে শেয়ার করতে পারে সেভ এবং কন্টিনিউ ক্লিক করুন

ধাপ ৪:

১. গ্যালারিতে আপনার গিগ সম্পর্কিত ছবি, GIF, ভিডিও বা অডিও যোগ করুন। তবে ভিডিওটি ৭৫ সেকেন্ডের বেশি ও ৫০ এমবি এর বেশি হওয়া যাবে না।

২. ছবি, GIF, ভিডিও বা অডিও আপলোড হবার পরে সেভ এবং কন্টিনিউ ক্লিক করুন।

৩. তারপর পাবলিশ গিয়ে ক্লিক করে done ক্লিক করলে আপনার গিগটি পাবলিশ হয়ে যাবে।

তবে গিগ খোলার আগে বা পরে কিছু test দিতে হয়। এই test গুলো সাধারণত skill বা English এর উপরে হয়ে থাকে। যদি আপনি ডাটা এন্ট্রি গিগ খুলতে চান আপনাকে অবশ্যই English test দিয়ে পাশ করতে হবে তারপর আপনার গিগ publish করা হবে।

কেন আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যেতে পারে?

একটি কথা কথা সবসময় মনে রাখতে হবে অন্যের গিগ থেকে কোন কিছু কপি করা যাবে না। কারণ অন্য কারো থেকে কপি করলে ফাইভার ধরে ফেলবে এবং আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দিতে পারে। আবার আপনি যার থেকে কপি করেছেন তাকেও ব্যান করে দিতে পারে। তাই খুব সাবধান থেকে গিগ এবং অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। আপনি একটি ইমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে একাধিক ফাইভার খুলতে পারবেন না। একই কম্পিউটার থেকে আপনি একাধিক ফাইভার অ্যাকাউন্ট খুললেও আপনার অ্যাকাউন্ট টি ব্লক করে দিতে পারে।

শেষকথাঃ আশা করি আপনার এই আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পারবেন কিভাবে ফাইভার অ্যাকাউন্ট এবং গিগ খুলতে হয়। অ্যাকাউন্ট খুলে আপনি কিভাবে খুব সহজে গিগ তৈরি করবেন এবং কেন আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যেতে পারে। আমরা এরপরে আলোচনা করবে কিভাবে ফাইভার থেকে উপার্জন করা যায়।

 

Leave a Reply