Categories: Digital Marketing

বাংলাদেশে নারীদের ক্যারিয়ারে বা কর্মক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ ও বাধার সম্মুখীন হতে হয়

বাংলাদেশে নারীদের ক্যারিয়ারে বা কর্মক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ ও বাধার সম্মুখীন হতে হয়ঃ

বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ হিসাবে পরিচিত। বাংলাদেশি মহিলারা পুরুষদের তুলনায় বেশি দরিদ্র। তার মধ্যে সর্বাধিক আর্থিকভাবে দুর্বল হচ্ছে মহিলা প্রধান পরিবারগুলি। বিশেষভাবে তালাকপ্রাপ্ত, বিধবা ও পরিত্যাক্ত নারীদের নেতৃত্বে যে পরিবারগুলো তারাই বেশি দরিদ্র।

বিবাহ বিচ্ছেদ এবং বাল্যবিবাহ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। দক্ষিণ এশিয়ার মহিলাদের শারীরিক ও আর্থিক অবস্থা গভীরভাবে সংবেদনশীল, তন্মধ্যে বাংলাদেশি মহিলাদের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভয়াবহ । পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং সামাজিক ঐতিহ্য বেশিরভাগ মহিলাকে সীমাবদ্ধ করে। তারা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পুরুষদের আয়ের উপরে নির্ভরশীল থাকে।

কিন্তু বর্তমানে অসংখ্য নারী আত্মনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছেন। কর্মস্থলে নারীরা এখন পিছিয়ে নেই। তারাও পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে নারীরা প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে পুরষের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে নারীর অবস্থান আগের থেকে তুলনামূলকভাবে অনেকটাই ভালো। তারা এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কর্মস্থলেও জায়গা করে নিয়েছে। আগে নারীরা শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত ছিল। কিন্তু তারা এখন অনেক জায়গায় পুরুষদের থেকে বেশি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। বাল্যবিবাহ বন্ধ হওয়ার কারণে অনেক নারী লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়েছে।

তারপরেও একটা কথা থেকেই যায় নারীরা কি সমাজে এবং তাদের কর্মস্থলে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা পাচ্ছে?

সমাজে এখনও নারীরা লাঞ্চিত এবং প্রতারিত হচ্ছে। তারা কর্মস্থলেও যৌন হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। নারী পুরুষের বৈষম্যের কারনে আজ নারীরা অনেকটাই পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ২ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়। ৫০ বছরে হয়ত নারীদের জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে কিন্তু ইতিবাচক দিকের সাথে কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে।

কর্মক্ষেত্রে নারীরা আগের থেকে এগিয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে, যেমন নারী শ্রমিকরা তুলনামূলকভাবে পুরুষদের চেয়ে মজুরী কম পায়। আবার ব্যবসায়ে নারীরা কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। নিম্নে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলঃ

বাংলাদেশের অনেক নারীরা ব্যবসা শুরু করছেন, তবে তারা এখনও তাদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। এবং নারী উদ্যোক্তার সংখ্যাও বাড়ছে। তারা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছেন ব্যবসায়ের পরিবেশে টিকে থাকার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন।

নারীদের ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়ঃ

সীমাবদ্ধ তহবিলঃ

ব্যবসায়ের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে মূলধন। অনেক সময় ব্যবসায় শুরু করার সময়ে আর্থিক সমস্যা দেখা দিলে ব্যবসাটা বেশি দিন চালান যায় না। সেক্ষেত্রে ব্যাংক লোন নিয়ে অনেক ব্যবসায় শুরু করেন কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা একটু কঠিন হয়ে যায়। কারণ ব্যাংক লোণ নিলে কিছু জামানত রাখতে হয় আবার অনেক সময় মহিলাদের ব্যবসায় লোণ দিতে চায় না। মহিলাদের ব্যবসাগুলো এমন আর্থিক উদ্যোগগুলির মধ্যে একটি যেখানে আর্থিক সহায়তার অভাব রয়েছে। লিঙ্গ এবং সাংস্কৃতিক পক্ষপাতিত্বের কারণে মহিলাদের লোণ দিতে অস্বীকার করাও হয়।

ভারসাম্যপূর্ণ দায়িত্বঃ

বিপুল সংখ্যক মহিলা কেবল উদ্যোক্তা বা ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবেন টা নয়, তাদের পরিবার,স্বামী, সন্তান এবং অন্যান্য দায়িত্ব রয়েছে। অনেক সময় এরকম হয় কোনও মহিলাকে তার ব্যবসা বা পরিবার যে কোন ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। পরিবারের কেউ তাকে একজন মা ও স্ত্রী হিসাবে প্রত্যাশা করে।

তবে ব্যবসায়ের জন্য তাকে নেতৃত্ব দেওয়ার এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া দরকার। যাদের সামাজিক সহায়তার অভাব রয়েছে তাদের পক্ষে এটি আরও কঠিন হয়ে পড়ে কারণ তাদের পুরো দায়িত্ব নিজেদেরই বহন করতে হয়। কিছু মহিলা তাদের জীবনের এই দুটি ক্ষেত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেন এবং সফলও হন,আর অন্যরা সেটা দেখে অভিভূত হন।

ব্যর্থতার ভয়ঃ

ব্যবসায়ে ঝুঁকি থাকবে এটা খুবই সাধারন ব্যপার। উদ্যোক্তা বা ব্যবসা পরিচালনা করতে গেলে ঝুঁকিপূর্ণ এবং অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতেই হবে তখন নিজেকে ব্যর্থ মনে হতে পারে। তবে ব্যর্থতাকে কখনই ভয় করবেন না কারণ যারা ব্যর্থতাকে ভয় পায় তারা কখনও কিছু করার চেষ্টাই করে না। সাফল্যের গ্যারান্টি সহ কেউ ব্যবসায় যায় না। পরিচিত এবং অজানা ভয় নারীদের জন্য একটি প্রধান বিষয়।

তারা ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা করে, বিশেষত আশেপাশের অনেকেই ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ করে। এই ভয়টি বিষাক্ত এবং বিপদজনক, কারণ মহিলারা আত্মবিশ্বাসের পরিবর্তে ভয়ের জায়গা থেকে কাজ করতে শুরু করে। ফলস্বরূপ, তারা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে আর তারা সেটা করতে চায় না।

অপর্যাপ্ত সমর্থনঃ

লড়াই বা ব্যবসায়ে ব্যর্থতা পর্যাপ্ত সমর্থনের অভাবের ফলস্বরূপ হতে পারে। সমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রে মহিলারা সর্বাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, প্রাসঙ্গিক সংযোগের অভাব থেকে শুরু করে আর্থিক অ্যাক্সেস বা সংবেদনশীল সমর্থনের অভাব বোধ করেন। তাদের এই নতুন পথে পরিচালনার জন্য তাদের পরামর্শদাতা এবং স্পনসরের প্রয়োজন। কিন্তু স্পন্সরের মাধ্যমে ব্যবসায় শুরু করা অনেকটাই ব্যয়বহুল। তাই নারীরা সাপোর্ট পায়না কারো থেকে তাই তাদের ব্যবসায় শুরু করতে দেরি হয় আবার অনেকে ঝামেলা মনে করে শুরুই করেন না।

লিঙ্গ বৈষম্যঃ

আইন, সংস্কৃতি, ধর্ম এবং রাজনীতি একটি পুরুষতান্ত্রিক ভিত্তির ভিত্তিতে নির্মিত। কলঙ্ক ও বৈষম্যের মুখোমুখি হয়ে মহিলাদের অবশ্যই পৌরুষের সংসারে তাদের কাজ করা উচিত। যদিও আইন এবং নীতিগুলি সবার জন্য অনুকূল ব্যবসায়ের পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করেছে, প্রকৃত পরিবর্তনগুলো এখনও কার্যকর করা হয়নি।

নারীরা এখনও অনেকটাই লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হন। অনেকে খারাপ চোখে দেখে এবং বলে, মেয়েদের বাইরে কাজ করতে হবে কেন। মেয়েরা ঘরের কাজ করবে, সংসার সামলাবে এটাই ওদের কাজ। এই বিষয়টা নিয়েই সবার একটা বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।

সীমাবদ্ধ জ্ঞানঃ

জ্ঞান দিয়ে একজন মহিলাকে ক্ষমতায়ন করা ব্যবসায়ের সাফল্যের দীর্ঘ যাত্রার শুরু মাত্র। জীবন একটি প্রতিদিনের শেখার প্রক্রিয়া যেখানে প্রতিটি দিনই নতুন কিছু আসে। দুর্ভাগ্যক্রমে, এই তথ্যগুলোতে নারীর জ্ঞান সীমাবদ্ধ। অনেক ক্ষেত্র আছে যার সম্পর্কে নারীদের কোন আইডিয়া নেই। আর এই সীমাবদ্ধ জ্ঞান নিয়ে ব্যবসায় করা সম্ভব নয়।

প্রতিকূল ব্যবসায়িক পরিবেশঃ

মহিলাদের যে চ্যালেঞ্জগুলোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তার মধ্যে হল স্বল্প প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক এবং সামাজিক ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিবন্ধকতা যা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণকে সীমাবদ্ধ করে। ধর্ম মহিলাদের ব্যবসা করতে বাধা দেয়। কিছু দেশে, মহিলাদের জন্য পুরুষ সঙ্গী ডিল করতে হবে, আলোচনা করতে হবে এবং তাদের মুখোমুখি হতে হবে এটা সমাজের মানুষ ভালোভাবে গ্রহণ করেনা। এই চ্যালেঞ্জগুলো ব্যবসায় থেকে জগতে ধীরে ধীরে মহিলাদের দক্ষতা হ্রাস পাচ্ছে। কিন্তু যারা ক্যারিয়ারের প্রতি বেশি আগ্রহী তারা থেমে থাকেনা।

ভীরু স্বভাবঃ

মহিলারা স্বভাবতই লজ্জা পায় বা সবার সামনে আসতে তাদের একটা জড়তা কাজ করে। সমাজ কি বলবে, তার পরিবার তাকে সহায়তা করতে চায় না এসব বিষয় চিন্তা করে তারা কোন উদ্যোগ নিতে ভয় পায়। পরিবার ও সমাজের মহিলাদের সাফল্যের পাশে দাঁড়ানো এবং স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।

কর্মস্থলে নারীদের যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়ঃ

গত চার বছর ধরে Leanin.org এবং McKinsey কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ এবং অন্তর্ভুক্তি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও বিশ্বটি এগিয়ে চলেছে এবং কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমানভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে হতে পারে তবে বাস্তবতা একেবারেই আলাদা। কর্মক্ষেত্রে নারীদের অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, যেমনঃ

মহিলাদের প্রতিনিধিত্বঃ

মহিলারা এন্ট্রি স্তরের চাকরি থেকে শুরু করে উচ্চ পদস্থ ভূমিকা পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে বিচরন করে। উইমেন ইন ওয়ার্কপ্লেস 2018 এর প্রতিবেদন অনুসারে, কালো রঙের মহিলা প্রতিনিধি সবচেয়ে কম কারণ তাদেরকে সাদা বর্ণের পুরুষ এবং মহিলাদের পিছনে রাখে। বর্ণ বৈষম্যের শিকার হতে হয় অনেক নারীকে। এতে মেধা থাকা সত্তেও তারা অনেক পিছিয়ে পড়ে।

লিঙ্গ বৈষম্যঃ

ব্যবসায়ের মতো চাকরির ক্ষেত্রেও লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হতে হয়। পুরুষরা মনে করে এই কর্মস্থল তাদের জন্য মেয়েদের জন্য রান্নাঘর এবং সংসার সামলানো ওটাই তাদের কর্মস্থল।

যৌন হয়রানিঃ

কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির মুখোমুখি হওয়া অসংখ্য নারী এই বিষয়গুলো সামনে এনেছিল। এই ঘটনাগুলি অনাকাঙ্ক্ষিত মৌখিক হয়রানি থেকে শুরু করে বা শারীরিকভাবেও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন অনেক নারী। দ্য উইমেন ইন ওয়ার্কপ্লেস রিপোর্টে দেখা গেছে যে কর্পোরেট সেক্টরের চাকরিতে 35% নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। ইইওসি-র আরেকটি গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে যে 75% মহিলা হয়রানির শিকার হয়েছেন যারা এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েও তারা সেটা প্রকাশ করেননি। লোকেরা প্রায়শই জিজ্ঞাসা করে “ভুক্তভোগী কেন রিপোর্ট করেননি?” এর প্রাথমিক কারণ হল চাকুরীচ্যুত হওয়ার ভয়।

গর্ভাবস্থা বৈষম্যঃ

মাতৃত্ব বৈষম্যের কারণে প্রায় ৫০,০০০ এরও বেশি মহিলা তাদের চাকরি হারায়।এক ধরণের কর্ম বৈষম্য, গর্ভাবস্থার বৈষম্য বলতে বোঝায় যখন কর্মক্ষেত্রে মহিলারা চাকরীচ্যুত হয়। অনেক প্রতিষ্ঠানে গর্ভকালীন কোন ছুতি দেওয়া হয়না। তখন একজন নারীর চাকরি ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকেনা। অনেক সময় ছুটি না দিলেই অন্যরকম সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হতে হয়, যেমনঃ কর্মঘণ্টা হ্রাস করা, বেতন প্রদান, তার সুবিধাগুলি পরিবর্তন করা, পদোন্নতি দেওয়া ইত্যাদি।

সব জায়গায় নারীদের এরকম অনেক চালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। অনেকে টিকে থেকে সাফল্য অর্জন করেন আবার অনেকে সরে আসেন। তাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সামাজিক ও পারিবারিক চাপ উপেক্ষা করে অনেক নারীই আজ অন্যান্য নারীর আদর্শ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। আমাদের দেশকে উন্নত দেশে পরিনত করতে হলে নারীদেরও সমানভাবে নিরাপত্তার মাধ্যমে কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে।

 

Admin Arshed

Recent Posts

The Life Of Rickshaw Pullers Easier

The Life Of Rickshaw Pullers Easier Introduction of Rickshaw Pullers: Rickshaw pullers, often referred to…

11 months ago

Amazing Future Details for A Digital Marketer

Amazing Future Details for A Digital Marketer A Digital Marketer- A digital marketer is a…

11 months ago

Unleashing Branding Power: 5 Strategies for Business Success

Unleashing Branding Power: 5 Strategies for Business Success Branding Branding is more than just a…

11 months ago

Facebook vs Instagram

Facebook vs Instagram Facebook Marketing : Facebook marketing involves using the Facebook platform to promote…

11 months ago

How to Leverage Digital Marketing for Education

How to Leverage Digital Marketing for Education Unlocking the Power of Digital Marketing in Education…

11 months ago

How to Create Precise Buyer Personas

How to Create Precise Buyer Personas Introduction: In the world of contemporary marketing, audience comprehension…

11 months ago