Categories: Digital Marketing

গ্রাফিক্স ডিজাইন ও গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা ও কাজের সুযোগ

গ্রাফিক্স ডিজাইন ও গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা ও কাজের সুযোগঃ

আজকাল বিভিন্ন ন্যাশনাল ও মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি গুলোতে লোগো, পন্যের ডিজাইন এবং বিজ্ঞাপনের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রয়োজন হয়। কিন্তু খুব কম লোক আছেন যারা গ্রাফিক্স ডিজাইনকে তাদের পেশা হিসেবে বেছে নেন। কিন্তু বর্তমান ভাল মানের ডিজাইনের জন্য পেশাদার গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের চাহিদা বাড়ছে। ফ্রিলান্সিং করার কাজেও গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা অনেক।

গ্রাফিক্স ডিজাইন কি?

গ্রাফিক্স ডিজাইন হচ্ছে আর্ট বা শিল্প। কম্পিউটার সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে চিত্র ও তথ্য দ্বারা নকশা তৈরি করাকে গ্রাফিক্স ডিজাইন বলে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা দ্বারা আমরা শব্দ, চিত্র এবং নিজেদের ধারনার মিশ্রন ঘটিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ছবি তৈরি পারি। গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ আমরা হাত দিয়ে করতে পারি আবার কম্পিউটার দিয়েও করতে পারি। অ্যাডভান্স ও প্রফেশন্যাল ডিজাইন তৈরি করতে হলে অবশ্যই কম্পিউটার এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।

গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রাথমিক ধারণাঃ

গ্রাফিক ডিজাইনের অর্থ আরও ভালভাবে বোঝার জন্য, ডিজাইন তৈরির উপাদান এবং নীতিগুলি সম্পর্কে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। দর্শনীয়ভাবে আকর্ষণীয় এবং প্রভাবশালী ডিজাইন তৈরি করতে উপাদানগুলির সঠিক ব্যবহার ও রঙের সংমিশ্রণের বিষয়ে খুব ভাল ধারনা থাকা প্রয়োজন।

এই গ্রাফিক ডিজাইনের উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • রঙ
  • গঠন
  • লাইন
  • আকার
  • টেক্সচার
  • স্পেস ইত্যাদি ।

স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্সঃ স্টিল ইমেজ বলতে আমরা বুঝি স্থির চিত্র। কোন চিত্র ও লেখার মিশ্রন ঘটিয়ে ছবি যে ছবি তৈরি করা হয় সেটাই স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স।

মোশান গ্রাফিক্সঃ এটি গ্রাফিক ডিজাইনেরই একটি অংশ, ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড এর সাথে কিছু স্থির ছবি বা লেখা নির্দিষ্ট সময় পরপর টিভি বা কম্পিউটারের পর্দায় যে চলমান চিত্র ভেসে ওঠে তাকে মোশান গ্রাফিক্স বলে।

কিছু উল্লেখযোগ্য মোশান গ্রাফিক্স হচ্ছে-

  • বিজ্ঞাপন
  • অ্যানিমেটেড লোগো
  • ট্রেইলার
  • Presentation
  • Promotional ভিডিও
  • টিউটোরিয়াল ভিডিও
  • ওয়েবসাইট
  • অ্যাপস
  • ভিডিও গেমস
  • ব্যানার
  • GIF

ভিজ্যুয়াল আইডেন্টিটি গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ

একটি ব্র্যান্ড একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ক্রেতার মধ্যে একটি সম্পর্ক তৈরি করে। ভিজ্যুয়াল আইডেন্টিটি গ্রাফিক ডিজাইনটি হচ্ছে ব্র্যান্ডের এমন কিছু উপাদান যা ব্র্যান্ডের ফেইস হিসাবে কাজ করে যেমনঃ চিত্র, আকার এবং রঙ যা ব্র্যান্ডেরগুণাবলী প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এটি ব্র্যান্ডের অংশীদারদের সাথে লোগো, টাইপোগ্রাফি, রঙ প্যালেট, স্ট্যান্ডার্ড বিজনেস কার্ড, কর্পোরেট স্টেশনারি এবং ইমেজ লাইব্রেরির মতো ডিজাইন তৈরি করতে সহযোগিতা করে যা কোন ব্র্যান্ডের গুনাবলিগুলোকে উপস্থাপন করে এছাড়াও রয়েছে । ডিজাইনাররা প্রায়শই ভিজ্যুয়াল ব্র্যান্ডের নির্দেশিকার একটি সেট তৈরি করেন যা সেরা অনুশীলনগুলি বর্ণনা করে এবং বিভিন্ন মিডিয়া জুড়ে প্রয়োগ করা ভিজ্যুয়াল ব্র্যান্ডিংয়ের উদাহরণ সরবরাহ করে।

মার্কেটিং এবং বিজ্ঞাপণ গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ

দুর্দান্ত বিপণনের বৈশিষ্ট্য হল একটি পণ্য, পরিষেবা বা ব্র্যান্ড সম্পর্কে বিপণন করা হবে ক্রেতাদের যে প্রয়োজন, চাহিদা, সচেতনতা এবং তৃপ্তির উপর ভিত্তি করে । যেহেতু ক্রেতা সবসময় ভিজ্যুয়াল সামগ্রীকে আরও আকর্ষক মনে করে, তাই Marketing & advertising graphic design প্রতিষ্ঠান গুলিকে আরও কার্যকরভাবে প্রচার করতে সহায়তা করে।

নিম্নে কিছু বিপণন গ্রাফিক ডিজাইনের উদাহরণ দেওয়া হলঃ

  • পোস্টকার্ড ও ফ্লাইয়ার
  • পোস্টার, ব্যানার এবং বিলবোর্ড
  • ইনফোগ্রাফিক্স
  • ব্রোশিয়ার
  • ম্যাগাজিন এবং সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন
  • ইমেল মার্কেটিং টেম্পলেট
  • সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাড

 

ইউজার ইন্টারফেস গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ

একটি ইউজার ইন্টারফেস (ইউআই) হল কীভাবে কোন ব্যবহারকারী ডিভাইস বা অ্যাপ্লিকেশনটির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে। ইউআই ডিজাইন হ’ল ইন্টারফেসগুলি ডিজাইন করার প্রক্রিয়া যা তাদের ব্যবহার সহজ করে তোলে। একটি ইউআই ব্যবহারকারী স্ক্রিন, কীবোর্ড এবং মাউস এর সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে। তবে ইউআই ডিজাইন ব্যবহারকারীর ভিজুয়্যাল অভিজ্ঞতার উপর বেশি গুরুত্ব দেয় যেমন – বাটন, মেনু, মাইক্রো-ইন্টারঅ্যাকশন ইত্যাদি।

ইউজার ইন্টারফেস গ্রাফিক্স ডিজাইনগুলো হচ্ছেঃ

পাবলিকেশন গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ

প্রকাশনীগুলো তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনার মাধ্যমে দর্শকদের সাথে যোগাযোগ করে আসছে। তারা ঐতিহ্যগতভাবে একটি মুদ্রণ মাধ্যম। পাবলিকেশন গুলো অনেক রকম প্রকাশনা করে যেমন –

  • বই
  • সংবাদপত্র
  • নিউজলেটারস
  • পত্রিকা
  • ডিরেক্টরি
  • বার্ষিক প্রতিবেদন
  • ক্যাটালগ ইত্যাদি।

প্রকাশনা ডিজাইনারদের অবশ্যই দুর্দান্ত যোগাযোগ, বিন্যাস এবং সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জন করতে হয় এবং গ্রাফিক ডিজাইনের দক্ষতার পাশাপাশি তাদের রঙ, মুদ্রণ এবং ডিজিটাল প্রকাশনায় দক্ষ থাকতে হয়।

গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য আর্ট এবং চিত্রাঙ্কনঃ

গ্রাফিক আর্ট এবং চিত্রাঙ্কন গ্রাফিক ডিজাইনের মতো মনে হলেও একেবারেই আলাদা। গ্রাফিক্স ডিজাইন করার জন্যই গ্রাফিক আর্ট এবং চিত্রাঙ্কন করা হয়ে থাকে। গ্রাফিক আর্ট এবং ইলাস্ট্রেশন প্রযুক্তিগতভাবে গ্রাফিক ডিজাইনের মতো না হলেও গ্রাফিক ডিজাইনের প্রেক্ষাপটে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যে আপনি একটির বিষয়ে বললে অন্য বিষয়টি চলে আসে।

গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য আর্ট এবং চিত্রাঙ্কনের উদাহরণ –

  • টি –শার্ট ডিজাইন
  • Graphic patterns for textiles
  • Comic books
  • Album art
  • বুক কভার
  • পিকচার বুক
  • Infographics
  • Technical illustration
  • কনসেপ্ট আর্ট

গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ডিজাইনারদের চাহিদাঃ

আমরা উপরের যে বিষয়গুলো দেখলাম সেসব কাজের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রয়োজন হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, ফ্লাইয়ার, পোস্টার ইত্যাদি তৈরি করে থাকে। এছাড়াও পন্যের ডিজাইন, প্যাকেটের ডিজাইন, লোগো, বিজ্ঞাপন ও বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাফিক ডিজাইনারদের নিয়োগ করে থাকেন। এখন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে চাকরিজীবী, অবসরপ্রাপ্ত এবং গৃহিণীরাও গ্রাফিক্সের কাজে আগ্রহী। কারণ ছোট বড় সব প্রতিষ্ঠানেই ডিজাইনারদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তবে আপনাকে অবশ্যই ভাল কাজ জানতে হবে।

গ্রাফিক্স ডিজাইনে চাকরির সুযোগঃ

গ্রাফিক্স ডিজাইনে দক্ষতা অর্জন করার পরে আমরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হতে পারি। যেমন-

  • লোগো ডিজাইনার হিসেবে
  • বিজ্ঞাপন তৈরি করে এমন কোনো কোম্পানিতে
  • ওয়েব ডিজাইনার
  • বিভিন্ন প্রকাশনীগুলোতে
  • অ্যাপ্লিকেশান ও গেম ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক
  • মিডিয়া পাবলিশিং কোম্পানিতে
  • ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি ডিজাইনার এবং
  • এ্যনিম্যাশন ডিজাইনার হিসেবে বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করতে পারি।

অনলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে আয়ঃ

অনলাইন মার্কেট প্লেসে গ্রাফিক ডিজাইনের চাহিদা প্রচুর। লক্ষ লক্ষ ফ্রিলান্সার প্রতিদিন গ্রাফিক্সের কাজ করে অর্থ উপার্জন করছে। তার মধ্যে অন্যতম কিছু কাজ হলঃ

১. ফন্ট ডিজাইন

২. লোগো ডিজাইন

৩. টিশার্ট ডিজাইন

৪. বিজনেস কার্ড ডিজাইন

৫. ফ্লাইয়ার ডিজাইন

৬. ব্যানার ডিজাইন

৭. ভিডিও এডিটিং

এরকম অনেক কাজ রয়েছে যার মাধ্যমে ফ্রিলান্সিং করে আয় করা যায়। অনেকে করোনা কালে ঘরে বসে অনলাইনে গ্রাফিক্সের কাজ শিখছেন । অনেকে আবার গ্রাফিক্সের কাজ করে সফলতা অর্জন করেছেন। ইতিমধ্যে আমরা গ্রাফিক্স ডিজাইন কি, গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা ও কাজের পরিধি সম্পর্কে জানলাম।

শেষকথাঃ আপনি কোনো কাজ ভালোভাবে করার চেষ্টা করেন এবং ধৈর্য সহকারে কাজটি সম্পন্ন করেন সাফল্য আসবেই। আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আপনাকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিবে।

 

 

Admin Arshed

Share
Published by
Admin Arshed

Recent Posts

The Life Of Rickshaw Pullers Easier

The Life Of Rickshaw Pullers Easier Introduction of Rickshaw Pullers: Rickshaw pullers, often referred to…

11 months ago

Amazing Future Details for A Digital Marketer

Amazing Future Details for A Digital Marketer A Digital Marketer- A digital marketer is a…

11 months ago

Unleashing Branding Power: 5 Strategies for Business Success

Unleashing Branding Power: 5 Strategies for Business Success Branding Branding is more than just a…

11 months ago

Facebook vs Instagram

Facebook vs Instagram Facebook Marketing : Facebook marketing involves using the Facebook platform to promote…

11 months ago

How to Leverage Digital Marketing for Education

How to Leverage Digital Marketing for Education Unlocking the Power of Digital Marketing in Education…

11 months ago

How to Create Precise Buyer Personas

How to Create Precise Buyer Personas Introduction: In the world of contemporary marketing, audience comprehension…

11 months ago